ধর্ম নিয়ে কর্ম
ধর্ম এই কথাটি উচ্চারণ হলেই আমাদের মনে একটি ভক্তির আধার যেন মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। এটি সংস্কৃতি ধৃ ধাতু ধৃ+মান=ধর্ম এসেছে। যার অর্থ কিছু ধারণ করা। আমার ছোট বেলায় এই প্রশ্নের সন্মুখিন অনেক বার হয়েছি, জলে ধর্ম কি? আগুনের ধর্ম কি? অর্থাৎ যে, যে যে গুণের আধার সেটাই তার ধর্ম। যদি সেই গুণটা তার থেকে আলাদা করা হয় , তা হলে সে সেই ধর্ম থেকে বিচ্চুত হবে। অর্থাৎ এক কথায় তার কর্মই তার ধর্ম।কিছু লোক নিজেদের সুবিধার্থে নিজেদের মতো বলেন। Religion আমারা ধর্ম মনে করি , না Religion, অর্থ বিশ্বাস কিন্তু ধর্ম শুধু বিশ্বাসের আধার নয়, ধর্ম হলো তার দ্বারাথ চালিত হওয়া কর্ম। যেমন – আগুনে ধর্ম দাহ্য, জলের ধর্ম শীতলতা , পশুর ধর্ম পশুত্ব, তেমনি মানুষের ধর্ম মনুষ্যত্ব, বর্তমানে সবাই ধর্মকে দুই ভাগে ভাগ করেছে , আমার ধর্ম, তোমার ধর্ম,বলা বাহুল্য , আমার ধর্ম শ্রেষ্ঠ। আমরা যদি ধর্ম সম্পর্কে একটু সু -পষ্ট ধারনা নিতেপারি তাহলে হয়তো মানষিক ও সামাজিক শৃঙ্খলায় চলা যেতো। যেমন – একটি সু-মিষ্টি আমের যা ধর্ম সে তো তাই দেবে, আর একটি টক ফল আমড়া তার যা ধর্ম সে তো তাই দেবে।এদের ধর্ম অনুযায়ী বিচার করলে তারা নিজেদের ধর্মে ঠিক আছে। আমাদের গ্রহণের উপর নির্ভর করছে আমাদের ধর্ম। কোন ব্যক্তির সম্পাদিত কর্মই তার ধর্ম হয়ে দাঁড়ায়। আক্ষরিক অর্থে ধর্ম তিন প্রকার স্বধর্ম, অধর্ম, জাতি ধর্ম। মানুষের স্বধর্ম হলো তার স্বাভাব অনুযায়ী যা সে করে তাই। আর মানুষ যখন অপরের অ-কল্যানের জন্য কোন কর্ম করে তা হলো অ-ধর্ম। আর প্রত্যেক জাতির একটি নিজস্ব ঐতিহ্যগত কর্ম থাকে যা তারা বিশ্বাসের সঙ্গে অনুসরণ করে তাহলো – পোশাক, জীবনাচার, তাদের সংস্কৃতি এগুলো। এটা হলো জাতি ধর্ম। তবে সকল ধর্মে একটা মিল রয়ে গেছে সেটা হলো উপাসনা।প্রতিটি ধর্মেই তাদের বিশ্বাসের জায়গা থেকে উপসনা করে। আমরা যদি একটু ইতিহাসকে দেখি দেখবো কয়েক লক্ষ বছর আগে মানুষ প্রকৃতি আর তার নিজের অস্তিত্ব ছাড়া আর কিছু জানতো না। প্রকৃতির নানা দূরযোগের মধ্য দিয়ে যেতো। তাই তাদের মনে হয় যে কোন ভাবে প্রকৃতিকে সন্তুষ্ট রাখতে হবে। অগ্নি,বায়ু,জল, বজ্রপাত, তাদেরকে সন্তুষ্ট রাখা জন্য বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানে শুরু করে। এই ভবেই পৃথিবীতে ধর্মীয় উপাসানাশুরু হয়। তবে ধর্ম হওয়া উচিত মানুষ যা শ্রদ্ধা সহকারে বিশ্বাস করবে, যাকে সে ভালোবাসতে পারবে। তাই জোর করে তাকে কেউ বিশ্বাস করাবে না। বা তার উপর চাপিয়ে দেবেনা। এই টুকু স্বাধীনতা মনে হয় থাকাটাই স্বাভাবিক।